১১।।প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন:১১।। প্রাথমিক শিক্ষায় আপনি শিশুদের শাস্তির পক্ষে না বিপক্ষে?
উত্তর: ভবিষ্যতে একজন শিক্ষক হিসেবে আমি শিশুদের শাস্তি দেওয়ার চেয়ে ইতিবাচক পদ্ধতিতে শেখানোর উপর বেশি গুরুত্ব দেব। প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীরা সহজে ভয় পেতে পারে এবং শাস্তির ফলে তাদের মনে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। তাই, আমি মনে করি উৎসাহ ও পজিটিভ রিইনফোর্সমেন্টের মাধ্যমে তাদের শৃঙ্খলাবদ্ধ করা উচিত, যাতে তারা শেখার প্রতি আগ্রহী থাকে এবং মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত না হয়।
কীভাবে উত্তর দেবেন:
আপনার উত্তরে বলুন, শিশুদের শেখানোর জন্য উৎসাহ ও সহানুভূতির মাধ্যমে ইতিবাচক আচরণ গড়ে তোলার চেষ্টা করবেন। তাদের ভুল থেকে তাদের শেখার জন্য একটি বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করবেন যাতে তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজেদের শুদ্ধ করতে পারে।
উদাহরণ:
"যদি আমি শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হই, আমি শিশুকে শাস্তি না দিয়ে তাদের ভুল গুলো শুধরানোর চেষ্টা করব। উদাহরণস্বরূপ, আমি ভালো আচরণের জন্য পুরস্কার প্রদান করতে পারি বা গ্রুপে কাজ করতে উৎসাহিত করব, যাতে তারা একে অপরের কাছ থেকে ভালো আচরণ শিখতে পারে। এছাড়া, ভুলের ক্ষেত্রে তাদের সাথে কথা বলে সেটি সংশোধনের উপায় শিখিয়ে দেব। এতে তারা শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং ভবিষ্যতে ভালো আচরণ করতে উৎসাহ পাবে।"
১২।।প্রশ্ন ও উত্তর
১২।।প্রশ্ন: বিদ্যালয়ে কোনো শিশুর হঠাৎ ঠ্যালাঠালি করতে গিয়ে মাথা ফেটে গেছে আপনি কি করবেন?
উত্তর: ভবিষ্যতে একজন শিক্ষক হিসেবে, এমন পরিস্থিতিতে তাৎক্ষণিকভাবে শিশুটির সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং প্রয়োজনীয় প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করাই হবে আমার প্রথম পদক্ষেপ। আমি প্রথমে মাথা ফাটার স্থানে ন্যাপকিন বা গজ চাপ দিয়ে রক্ত বন্ধ করার চেষ্টা করব এবং প্রয়োজনে দ্রুত স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হাসপাতালের সাথে যোগাযোগ করব। এরপর অভিভাবকদের অবহিত করব এবং বিদ্যালয়ের প্রাথমিক চিকিৎসার সকল ব্যবস্থা ও নিয়ম মেনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।
কীভাবে উত্তর দেবেন:
উত্তরে প্রথমেই বলুন, আপনি পরিস্থিতি অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন এবং শিক্ষার্থীর সুরক্ষার ব্যাপারে সব সময় সতর্ক থাকবেন। শিশুটির শারীরিক অবস্থা ভালো হওয়া পর্যন্ত তার পাশে থাকবেন এবং অভিভাবকদের দ্রুত বিষয়টি জানাবেন।
উদাহরণ:
"যদি এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে, আমি প্রথমে আহত শিশুটির পাশে দাঁড়িয়ে তাকে শান্ত রাখব এবং প্রয়োজনীয় প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু করব। তারপর বিদ্যালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের অবহিত করব এবং অভিভাবকদের জানাব। ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা এড়াতে আমি শিক্ষার্থীদের আচরণের ওপর নজর রাখব এবং নিয়মিত সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করব।"
১৩।।প্রশ্ন ও উত্তর
১৩।।প্রশ্ন: শিখন ও শিক্ষনের মধ্যে তফাৎ কী? ব্যাখ্যা করুন।
উত্তর: শিখন ও শিক্ষন, এই দুটি প্রক্রিয়া শিক্ষার ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন ভূমিকা পালন করে। শিখন (Learning) হলো শিক্ষার্থীর নিজস্ব অভিজ্ঞতা, অনুসন্ধান, এবং উপলব্ধির মাধ্যমে জ্ঞান অর্জনের প্রক্রিয়া। এটি একজন ব্যক্তির ব্যক্তিগত বিকাশে সহায়তা করে। অন্যদিকে, শিক্ষন (Teaching) হলো শিক্ষকের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কাছে জ্ঞান, দক্ষতা ও তথ্য পৌঁছে দেওয়ার প্রক্রিয়া, যাতে শিক্ষার্থীরা সঠিকভাবে নতুন বিষয়বস্তু আয়ত্ত করতে পারে। শিক্ষন হলো একটি পরিচালনমূলক প্রক্রিয়া, যেখানে শিখন হলো শিক্ষার্থীর নিজস্ব অর্জন।
কীভাবে উত্তর দেবেন:
উত্তরে শিখন এবং শিক্ষনের মধ্যে ভিন্নতা নির্দিষ্ট করতে বলুন যে, শিখন ব্যক্তির অভিজ্ঞতার মাধ্যমে ঘটে, যেখানে শিক্ষন শিক্ষকের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। শিক্ষন হলো নির্দেশমূলক, এবং শিখন হলো অর্জনমূলক।
উদাহরণ:
"যখন একজন ছাত্র নিজের প্রচেষ্টায় একটি গণিত সমস্যা সমাধান করে, তখন এটি তার শিখনের উদাহরণ। কিন্তু যখন একজন শিক্ষক তাকে সেই সমস্যাটি কীভাবে সমাধান করতে হবে তা শেখাচ্ছেন, এটি শিক্ষনের উদাহরণ।"
১৪।।প্রশ্ন ও উত্তর
১৪।।প্রশ্ন: ব্ল্যাকবোর্ড ব্যবহার করার সময় কোন কোন বিষয়ে খেয়াল রাখবেন?
উত্তর: ব্ল্যাকবোর্ড ব্যবহারের সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের দিকে নজর রাখা প্রয়োজন, যাতে শিক্ষার্থীরা সহজে বিষয়টি বুঝতে পারে এবং শ্রেণীকক্ষের শিক্ষণ প্রক্রিয়া আরও কার্যকর হয়। ব্ল্যাকবোর্ড ব্যবহারের ক্ষেত্রে লক্ষ্যণীয় বিষয়গুলো হলো:
- বোর্ড পরিষ্কার এবং সুসংগঠিত রাখা, যাতে শিক্ষার্থীরা লেখা সহজে পড়তে পারে।
- বোর্ডে বড় ও স্পষ্ট হরফে লেখা, যা দূর থেকে পড়া সহজ হয়।
- বোর্ডের প্রতিটি অংশে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রাখা, যাতে কোনো অংশে আঁধার না পড়ে।
- যখন বোর্ডে লিখবেন, তখন শিক্ষার্থীদের দিকে পিঠ না করা এবং বোর্ডে লেখার পর তাদের দিকে ফিরে ব্যাখ্যা করা।
- তথ্যগুলো বিন্যস্তভাবে উপস্থাপন করা, যাতে শিক্ষার্থীরা সহজেই বিষয়বস্তু বুঝতে পারে।
কীভাবে উত্তর দেবেন:
উত্তরে বোর্ড ব্যবহারের সময় শিক্ষার্থীদের সুবিধা এবং বোর্ডে সুশৃঙ্খলভাবে তথ্য প্রদর্শনের গুরুত্ব তুলে ধরুন। এটি বোর্ড ব্যবহারের সময় দৃষ্টিনন্দনতা ও স্পষ্টতার উপর গুরুত্ব আরোপ করে।
উদাহরণ:
"আমি ব্ল্যাকবোর্ড ব্যবহার করার সময় চেষ্টা করি বড় এবং পরিষ্কার হরফে লিখতে, যাতে শ্রেণীকক্ষের সব শিক্ষার্থী লেখাগুলো স্পষ্টভাবে দেখতে পারে। বোর্ডে প্রতিটি বিষয় উপস্থাপনের পর, আমি শিক্ষার্থীদের দিকে ফিরে তাদের প্রতিক্রিয়া দেখে পরবর্তী অংশে যাই।"
১৫।।প্রশ্ন ও উত্তর
১৫।।প্রশ্ন: কোনো অভিভাবক তার সন্তানের পরীক্ষার ফলাফল তার মনোমত না হওয়ায় উদ্বিগ্ন, আপনি কীভাবে তাকে বোঝাবেন?
উত্তর: একজন শিক্ষক হিসেবে, আমি অভিভাবককে সন্তানের বর্তমান মানসিক ও শারীরিক অবস্থার প্রতি মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেব এবং তাকে বোঝাব যে শিক্ষার্থীর সামগ্রিক বিকাশে পরীক্ষার ফলাফলই একমাত্র মাপকাঠি নয়। আমি তাকে আশ্বস্ত করব এবং শিক্ষার্থীর জন্য উন্নতির কিছু পদক্ষেপও সুপারিশ করব।
- শিক্ষার্থীর দুর্বল ও শক্তিশালী দিকগুলো শনাক্ত করে সেগুলোতে মনোযোগ দিতে বলব।
- ধৈর্য ধরে শিক্ষার্থীকে প্রতিদিন অনুশীলনের মাধ্যমে ফলাফল উন্নতির চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেব।
- পরীক্ষার ফলাফলকে একমাত্র সাফল্যের সূচক হিসেবে না দেখে দীর্ঘমেয়াদী শেখার এবং জীবনমুখী শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করতে বলব।
কীভাবে উত্তর দেবেন:
উত্তরে শিক্ষার্থীকে উন্নতির সুযোগ এবং ধৈর্যের সঙ্গে শেখানোর গুরুত্ব উল্লেখ করতে হবে। অভিভাবককে বোঝানোর সময় মানবিক দৃষ্টিকোণ নিয়ে বিষয়টি ব্যাখ্যা করবেন এবং শিক্ষার্থীর সামগ্রিক উন্নতির উপর জোর দেবেন।
উদাহরণ:
"আমি তাকে বলব, ‘ফলাফল যদিও সন্তোষজনক হয়নি, এটি কেবল শেখার একধাপ মাত্র। আমরা একসঙ্গে পরিকল্পনা করে ধারাবাহিক পরিশ্রমের মাধ্যমে তার উন্নতির চেষ্টা করব। সন্তানকে নিয়ে ধৈর্যশীল থাকুন এবং তাকে উৎসাহ দিন।’"
১৬।।প্রশ্ন ও উত্তর
১৬।।প্রশ্ন: কোনো অভিভাবক তার সন্তানের পরীক্ষার ফলাফল তার মনোমত না হওয়ায় উদ্বিগ্ন, আপনি কীভাবে তাকে বোঝাবেন?
উত্তর: একজন শিক্ষক হিসেবে, আমি অভিভাবককে সন্তানের বর্তমান মানসিক ও শারীরিক অবস্থার প্রতি মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেব এবং তাকে বোঝাব যে শিক্ষার্থীর সামগ্রিক বিকাশে পরীক্ষার ফলাফলই একমাত্র মাপকাঠি নয়। আমি তাকে আশ্বস্ত করব এবং শিক্ষার্থীর জন্য উন্নতির কিছু পদক্ষেপও সুপারিশ করব।
- শিক্ষার্থীর দুর্বল ও শক্তিশালী দিকগুলো শনাক্ত করে সেগুলোতে মনোযোগ দিতে বলব।
- ধৈর্য ধরে শিক্ষার্থীকে প্রতিদিন অনুশীলনের মাধ্যমে ফলাফল উন্নতির চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেব।
- পরীক্ষার ফলাফলকে একমাত্র সাফল্যের সূচক হিসেবে না দেখে দীর্ঘমেয়াদী শেখার এবং জীবনমুখী শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করতে বলব।
কীভাবে উত্তর দেবেন:
উত্তরে শিক্ষার্থীকে উন্নতির সুযোগ এবং ধৈর্যের সঙ্গে শেখানোর গুরুত্ব উল্লেখ করতে হবে। অভিভাবককে বোঝানোর সময় মানবিক দৃষ্টিকোণ নিয়ে বিষয়টি ব্যাখ্যা করবেন এবং শিক্ষার্থীর সামগ্রিক উন্নতির উপর জোর দেবেন।
উদাহরণ:
"আমি তাকে বলব, ‘ফলাফল যদিও সন্তোষজনক হয়নি, এটি কেবল শেখার একধাপ মাত্র। আমরা একসঙ্গে পরিকল্পনা করে ধারাবাহিক পরিশ্রমের মাধ্যমে তার উন্নতির চেষ্টা করব। সন্তানকে নিয়ে ধৈর্যশীল থাকুন এবং তাকে উৎসাহ দিন।’"
১৭।।প্রশ্ন ও উত্তর
১৭।।প্রশ্ন: বিদ্যালয়ে কোনো শিশু যদি খারাপ কথা বলে অর্থাৎ গালমন্দ করে, আপনি একজন শিক্ষক হিসেবে কী করবেন?
উত্তর: একজন শিক্ষক হিসেবে, আমি প্রথমে শিশুটিকে আলাদাভাবে ডেকে নিয়ে আসব এবং তাকে ধীরে-সুস্থে বোঝানোর চেষ্টা করব যে খারাপ কথা বলা ঠিক নয় এবং এটি তার নিজের বা অন্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
- প্রথমে শিশুটিকে বুঝতে চেষ্টা করব, কেন সে এমন ভাষা ব্যবহার করছে, এবং তার সাথে সহানুভূতিশীলভাবে কথা বলব।
- শিষ্টাচারের গুরুত্ব বোঝাবো এবং ভালো ভাষা ব্যবহারের প্রভাব সম্পর্কে অবহিত করব।
- তার সামনে ভালো উদাহরণ তৈরি করে এবং ইতিবাচক শব্দ ব্যবহারের জন্য তাকে উৎসাহিত করব।
- অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করব এবং পরিবার থেকেও ইতিবাচক সহায়তা চাওয়ার পরামর্শ দেব।
কীভাবে উত্তর দেবেন:
উত্তরে শিশুর মানসিক বিকাশ এবং সামাজিক আচরণের উপর গুরুত্ব দিতে হবে। তাকে ইতিবাচক আচরণ এবং ভাষার ব্যবহার শেখানোর পদ্ধতিগুলো উল্লেখ করা হবে যাতে সে সহজেই ভুল ধারণা পরিহার করতে শেখে।
উদাহরণ:
"আমি শিশুটিকে বলব, ‘তুমি যদি ভালো এবং সুন্দর শব্দ ব্যবহার করো, তাহলে সবাই তোমাকে পছন্দ করবে এবং তুমি নিজেও অনেক ভালো অনুভব করবে।’ এভাবে আমি তার সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করব এবং তাকে বোঝাতে চেষ্টা করব যে, ভালো ভাষা ব্যবহার করা তার নিজের এবং অন্যদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ।"
১৮।।প্রশ্ন ও উত্তর
১৮।।প্রশ্ন: একজন চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র একজন চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রীকে প্রেমপত্র লিখেছে। আপনি একজন শিক্ষক হিসেবে ছাত্রটিকে কীভাবে বিষয়টি বোঝাবেন?
উত্তর: একজন শিক্ষক হিসেবে, আমি বিষয়টিকে অত্যন্ত সংবেদনশীলভাবে পরিচালনা করব এবং সরাসরি বকাঝকা না করে বন্ধুত্বপূর্ণ ভঙ্গিতে ছাত্রটির সাথে কথা বলব।
- প্রথমে ছাত্রটির সাথে একান্তে আলাপ করব, যাতে সে আরামদায়ক পরিবেশে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে পারে।
- তারপর তাকে বোঝাবো যে এই বয়সে বন্ধুত্ব এবং খেলার মাধ্যমে একে অপরকে জানাই গুরুত্বপূর্ণ, প্রেম বা অন্য কোনো জটিল বিষয় এই বয়সের জন্য উপযুক্ত নয়।
- তার আগ্রহ এবং মনোযোগ পড়াশোনায় এবং সহপাঠ্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে উৎসাহিত করব।
- পরিস্থিতি অনুযায়ী অভিভাবকদের বিষয়টি সম্পর্কে সংক্ষেপে অবহিত করা উচিত, যাতে বাড়ি থেকেও সঠিক দিকনির্দেশনা পাওয়া যায়।
কীভাবে উত্তর দেবেন:
উত্তরে সন্তানের বর্তমান মানসিক ও শারীরিক বিকাশ এবং বয়স উপযোগী আচরণ নিয়ে কথা বলতে হবে। শিশুদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ার উপযুক্ত দিকনির্দেশনা দেয়ার কথা উল্লেখ করবেন।
উদাহরণ:
"আমি ছাত্রটিকে বলব, ‘তোমার বন্ধুর সাথে খেলাধুলা এবং পড়াশোনায় মনোযোগ দেয়াই এখন সবচেয়ে জরুরি। আমাদের বয়স অনুযায়ী কিছু বিষয় বুঝে এবং মেনে চলতে হয়। ভবিষ্যতে তুমি আরও ভালোভাবে এইসব বিষয় বুঝতে পারবে।’ এভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনা করব, যাতে তার মনে নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে এবং সে নিজের আচরণ নিয়ে সচেতন হয়।"
১৯।।প্রশ্ন ও উত্তর
১৯।।প্রশ্ন: প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের নৈতিক শিক্ষা উন্নত করতে আপনি কী কী পদক্ষেপ নেবেন?
উত্তর: প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের নৈতিক মূল্যবোধ এবং সঠিক আচরণ গড়ে তুলতে আমি বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ গ্রহণ করব:
- **মূল্যবোধ বিষয়ক গল্প**: ক্লাসে নৈতিক মূল্যবোধ সংক্রান্ত ছোট গল্প শোনানো হবে, যেমন সততা, দয়া, সম্মান, এবং সহযোগিতার মতো বিষয়।
- **আচরণ মডেলিং**: প্রতিদিনের আচরণে শিক্ষার্থীদের সামনে সঠিক উদাহরণ স্থাপন করব, যাতে তারা আমার আচরণ থেকে শিখতে পারে।
- **সহপাঠী সহযোগিতা**: শিক্ষার্থীদের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার মানসিকতা তৈরি করতে বিভিন্ন দলীয় কার্যক্রম এবং প্রকল্পের আয়োজন করব।
- **নৈতিক শিক্ষার জন্য নিয়মিত আলোচনা**: সপ্তাহে একবার নৈতিক শিক্ষা নিয়ে আলোচনা করব, যাতে তারা প্রতিদিনকার জীবনে এ মূল্যবোধগুলি প্রয়োগ করতে পারে।
- **নিয়মিত পর্যালোচনা ও মূল্যায়ন**: শিক্ষার্থীদের আচরণ ও মূল্যবোধের প্রতি মনোযোগ দিয়ে তাদের ইতিবাচক অগ্রগতি নিয়মিত পর্যালোচনা করা হবে।
কীভাবে উত্তর দেবেন:
উত্তরে নৈতিক মূল্যবোধ ও সঠিক আচরণ তৈরির জন্য বিভিন্ন শিক্ষণ কৌশল এবং নিয়মিত কার্যক্রমের উল্লেখ করা উচিত। বিশেষত, শিশুদের বাস্তব জীবনের উদাহরণ দিয়ে বোঝানোর কথা বলা দরকার।
উদাহরণ:
"আমি শিক্ষার্থীদের প্রতি সপ্তাহে একটি গল্পের মাধ্যমে সততা বা দয়া সম্পর্কে শেখাবো এবং তাদের সাথে এই মূল্যবোধ নিয়ে আলোচনা করব। এর মাধ্যমে তারা শুধু গল্প শুনবে না, বরং কিভাবে সেই মূল্যবোধকে জীবনে প্রয়োগ করতে হবে তা শিখবে।"
২০।।প্রশ্ন ও উত্তর
২০।।প্রশ্ন: স্কুল ছুট বা ড্রপ আউট কমাতে আপনি কী কী পদক্ষেপ নেবেন?
উত্তর: স্কুল ছুট কমানোর জন্য আমি কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেব যা শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে:
- অভিভাবকদের সচেতনতা বৃদ্ধি: স্কুলে অভিভাবকদের সাথে নিয়মিত বৈঠক করে শিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করব। অভিভাবকদের সচেতন করা প্রয়োজন যেন তারা শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসতে উৎসাহিত করে।
- মজাদার শিক্ষণ পদ্ধতি প্রয়োগ: পাঠদানকে আকর্ষণীয় ও ইন্টারঅ্যাকটিভ করতে মজাদার কার্যক্রম ও খেলাধুলা যুক্ত করব, যাতে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসতে আগ্রহী হয়।
- অর্থনৈতিক সহায়তা: শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে বই, ইউনিফর্ম ও মিড-ডে মিলের ব্যবস্থা নিশ্চিত করব, যা অনেক সময় ড্রপ আউট কমাতে সহায়ক হয়।
- ব্যক্তিগত মনোযোগ প্রদান: যেসব শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকে, তাদের সাথে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলে সমস্যাগুলি সমাধানের চেষ্টা করব এবং প্রয়োজনে বাড়িতে গিয়েও কথা বলব।
- শিক্ষার্থীদের অভ্যন্তরীণ সমস্যা চিহ্নিতকরণ: শিক্ষার্থীদের সাথে আলাপচারিতার মাধ্যমে তাদের যেকোনো মানসিক, পারিবারিক বা আর্থিক সমস্যার সমাধানে সহায়তা করব, যা তাদের নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসতে উদ্বুদ্ধ করবে।
কীভাবে উত্তর দেবেন:
উত্তরে স্কুল ছুট কমানোর বিভিন্ন কার্যকরী উপায় উল্লেখ করা উচিত, যেমন অভিভাবকদের সচেতন করা, শিক্ষণ পদ্ধতির আধুনিকীকরণ, এবং অর্থনৈতিক সহায়তার ব্যবস্থা। এভাবে উত্তর দিলে অভিভাবকদের এবং শিক্ষার্থীদের প্রতি দায়িত্বশীলতা প্রকাশ পায়।
উদাহরণ:
"আমি লক্ষ্য করেছি যে, শিক্ষার্থীরা যদি ক্লাসে মজার কিছু শিখতে পারে, তবে তারা অনুপস্থিত হওয়ার প্রবণতা কমিয়ে আনে। এজন্য আমি ক্লাসে বিভিন্ন শিক্ষামূলক খেলার ব্যবস্থা করব এবং সপ্তাহে একবার বিশেষ দিন উদযাপন করব, যাতে তারা বিদ্যালয়ে আসতে উৎসাহী হয়। পাশাপাশি, যেসব শিক্ষার্থী আর্থিক সমস্যার কারণে বিদ্যালয়ে আসতে পারছে না, তাদের জন্য সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করব।"
No comments:
Post a Comment